আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি পলাতকদের অবস্থান সম্পর্কে কেউ সঠিক তথ্য দিলে তাকে সরকারের পক্ষ হতে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বঙ্গবন্ধুর খুনি পলাতক আসামীদের ব্যাপারে খোঁজ দিতে সবার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘১৯৭৫ পরবর্তী সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। বিভিন্ন মিশনে পদায়ন করেছে। আমি সবার প্রতি আহবান জানাই, বঙ্গবন্ধুর খুনি পলাতকদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিলেই সরকার আপনাদের পুরস্কার দিবে।’
বঙ্গবন্ধুর খুনি পলাতক আসামীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পলাতকদের মধ্যে দুজন, যাদের একজন আমেরিকায় থাকে, রাশেদ চৌধুরী। অন্যজন (নূর চৌধুরী) সে থাকে কানাডায়। তাদের নিয়ে আসার জন্য আমরা অনেক চিঠি দিয়েছি, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও চিঠি লিখেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে। তারা সবসময় বলে ইস্যুটা তাদের এটর্নি জেনারেলের অফিসে আছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কানাডায় থাকা আরেক আসামির অবস্থান কি সেটাও তারা (কানাডা সরকার) বলে না। সেজন্য কানাডায় আমরা কেসও করেছি। কেসে জাজ রায় দিয়েছেন, তার অবস্থান সম্পর্কে জানাতে। এব্যাপারে কানাডার সরকারের কোন আপত্তি থাকা উচিত না। তবুও তারা তথ্য দেয় না। এই দুজন সম্পর্কে আমরা জানি। অন্যদের সম্পর্কে আমরা জানি না।’
ড. মোমেন বলেন, ‘কানাডার সরকার বারবার অজুহাত দেখায় যে, যেসব দেশে মৃত্যুদণ্ড আছে সেসব দেশে তারা আসামি পাঠাবে না। এভাবে তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিকে আশ্রয় দিচ্ছে।’
সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আওয়াজ তুলুন, আমেরিকা ও কানাডার মত শক্তিশালী আইনের দেশ খুনিদের কেন আশ্রয় দেয়?’
তিনি কানাডা ও আমেরিকার প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা খুনিদের বাড়ির সামনে গিয়ে ডেমনস্ট্রেশন (বিক্ষোভ) করেন। আমরা মহিউদ্দিনের বাড়ির সামনে ডেমনস্ট্রেশন করেছি। কোর্টের সামনেও করেছি। আমেরিকার সরকার তখন তাকে ফেরত পাঠিয়েছে। সুতরাং আমি প্রবাসী ভাইদের বলব, মাসে একবার হলেও মিডিয়াকে সাথে নিয়ে তাদের বাড়ির সামনে বা যখন তারা বাইরে বের হয় তখন খুনি খুনি বলে তাদের মনঃপীড়া দিতে।’
খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারিভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশে যারা বুদ্ধিজীবীরা আছেন তারা গবেষণামূলক বই বের করেন। সাংবাদিকরা (তথ্য দিয়ে) সাহায্য করলে আমরা এগুলো এভিডেন্স হিসেবেও প্রদান করতে পারি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, এমপি। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, বাংলাদেশ পোস্টের সম্পাদক শরীফ শাহাবুদ্দিন-সহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, বিভিন্ন সাংবাদিক সংঠনের, নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন